এখনো তোমার সাজগোজ শেষ হয়নি? আর কতক্ষণ সাজবে বলো তো?
তন্ময় একটু বিরক্তির সুরে বলল।
-এই তো, হয়ে গেছে। প্রথম শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি, একটু তো সাজতেই হবে।
মুচকি হেসে বলল স্নিগ্ধা।
-গাড়ি এসে গেছে। আমি মালপত্রগুলো গাড়িতে তুলছি। তাড়াতাডি আসো। তুমি এমনিতেই সুন্দরী, অত সাজগোজের দরকার নেই।
-তাই নাকি?
স্নিগ্ধার ঠোঁটে লেগে থাকা মুচকি হাসি আরও গাঢ় হয়ে উঠল।
তন্ময় ব্যাগ বের করতে করতে হেসে বলল, অতটা পথ যেতে যেতে তোমার এই সাজগোজ ঘেঁটে যাবে। তখন তোমাকে পেত্নীর মতো দেখাবে।
-অ্যাই! আমায় পেত্নী বলো না! একটু আগেই বলেছো আমি সুন্দরী!
স্নিগ্ধা ভ্রু কুঁচকে নকল অভিমান দেখাল।
তন্ময় হেসে বলল, সুন্দরী তো বটেই। কিন্তু এই মেকআপ, কাজল আর লিপষ্টিক মুছে গিয়ে যখন ঘেঁটে যাবে, তখন তোমার মুখটা পেত্নীর মতোই লাগাব।
বলেই তন্ময় হাসাত হাসতে ব্যাগ নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
স্নিগ্ধা আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের প্রতিচ্ছবিকে দেখে নিজেও হেসে উঠল। তন্ময়ের এই হাসি-মজা করা স্বভাব তার বেশ ভালোই লাগে।
ডিসেম্বর মাস। শীত এখনো জাঁকিয়ে নামেনি। তবু স্নিগ্ধা শুনেছে, গ্রামে নাকি শীত বেশি পড়ে। তাই নীল রঙের শাড়ির ওপর নীল সোয়েটার পরে নিল সে। একটা শাল ভাঁজ করে কাঁধের ওপর রাখল, যেন প্রয়োজন পড়লে গায়ে জড়ানো যায়। সবকিছু ঠিকঠাক করে ভ্যানিটি ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গাড়ির কাছে এল সে।
তন্ময় তাকে দেখে একটু হেসে বলল, ফাটাফাটি লাগছে তোমায়।
স্নিগ্ধা হেসে গাড়িতে উঠে বসল। তার চোখে-মুখে উত্তেজনার ছাপ স্পষ্ট। আজ সে প্রথমবার শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে।
গাড়ি স্টেশনের দিকে ছুটে চলেছে। কিন্তু তন্ময় জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে চুপচাপ, মনমরা ভঙ্গিতে।
স্নিগ্ধা একটু অবাক হয়ে বলল, অ্যাই, চুপ হয়ে গেলে কেন?
তন্ময় কোনো কথা না বলে বাইরের দিকে তাকিয়েই বলল, ভাবছি।
-কী ভাবছ? স্নিগ্ধা জানতে চাইল।
তন্ময় এবার জানালা থেকে মুখ সরিয়ে স্নিগ্ধার দিকে তাকাল। এক মুহূর্ত চুপ থেকে বলল, তুমি এত আনন্দ নিয়ে যাচ্ছো। কিন্তু বাড়ির সবাই তোমায় আপন করে নেবে তো?
স্নিগ্ধা হেসে তন্ময়ের প্রশ্নের উত্তরে বলল, নেবেই। আমার নিজের উপর বিশ্বাস আছে। আমি আমার ব্যবহার আর কাজকর্ম দিয়ে তাদের মুগ্ধ করব। দেখবে, ওরা ঠিক আমাকে আপন করে নেবে।
তন্ময় স্নিগ্ধার হাতটি নিজের হাতে নিল। গভীর চোখে তার দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার সাথে যদি আমার বাড়ির লোকেরা খারাপ ব্যবহার করে? যদি বাড়িতে উঠতে না দেয়?
স্নিগ্ধা আত্মবিশ্বাসী হাসি হেসে বলল, তোমার মুখে বাড়ির লোকেদের সম্পর্কে যেটুকু শুনেছি, তাতে মনে হয় সেটা হবে না। আর যদি হয়েও যায়, তবু আমিনজার করে উঠব। হাত ধরে তো আর আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারবে না।
তার সহজ অথচ দৃঢ় উত্তর অন তন্ময় মুগ্ধ হয়ে তার হাতে আলতো করে একটা চুমু দিল।
স্নিগ্ধা লাজুক মুখে ফিসফিস করে বলল, হচ্ছেটা কী? ড্রাইভার যদি দেখে ফেলে, কী ভাববে বলো তো?
তন্ময় স্নিগ্ধার আরও কাছে সরে এসে তার কানের কাছে মুখ নিয়ে মিষ্টি হেসে বলল, যা ভাবে ভাবুক। আমি তো আমার বউকে আদর করছি! স্নিগ্ধা লজ্জায় রাঙা মুখে হাসল। তারপর চাপা গলায় বলল, সরে বসো তো। গাড়িতে আর এত ভালোবাসা দেখানোর দরকার নেই। স্টেশনের কাছেই এসে গেছি।
তন্ময় হেসে দূরে সরে বসল।
গাড়ি থামল শিয়ালদহ স্টেশনে। তারা ব্যাগপত্র নিয়ে স্টেশনে ঢুকল। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে। তারা টিকিট কোট ট্রেনে উঠে জায়গা নিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রেন ছুটে চলল।
আঠাশ বছরের তন্ময়, লম্বা-চওড়া গড়ন, ফর্সা গায়ের রং, দেখতে সুদর্শন, শিক্ষিত ও মিষ্টভাষী। আর পঁচিশ বছরের স্নিগ্ধা, অতীব ফর্সা, লম্বা,
শিক্ষিতা এবং তাগাস ত্যাতানিমাসে ভরা।
তন্ময় আর স্নিগ্ধা তিন বছর প্রেমের পর ছয় মাস আগে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছে। তারা কলকাতায় একটা ভাড়া বাড়িতে থাকে। তন্মষয় একটি কোম্পানিতে চাকরি করে।
তন্ময়ের বাড়ি বর্ধমান। বর্ধমানের কুসুমপুর গ্রামের জঙ্গল লাগোয়া 'বিক্রম ভিলা' নামের বাড়িটি তাদের। পুরোনো জমিদার বাড়ির মতো দেখতে এই 'বিক্রম ভিলা' বাড়িটি।
সাত মাস আগে তন্ময় শেষবার বাড়ি গিয়েছিল। সেবার সে তার বাবা-মাকে জানিয়েছিল যে সে কলকাতার মেয়ে স্নিগ্ধাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু বাড়ির লোকেরা এতে একদম রাজি হয়েছিলনা। তারা চেয়েছিল তন্ময় তার ছোটবেলার বান্ধবী পল্লবীকে বিয়ে করুক। তন্ময় তাতে রাজি না হওয়ায় ঝগড়া শুরু হয়েছিল। বাড়ির লোকেরা স্নিগ্ধার একটি ছবিও দেখতে চেয়েছিলনা। তন্ময় জোর করে স্নিগ্ধার ছবি দেখাতে চাইলে তার বাবা রাগ করে ছবিটি সরিয়ে রাখতে বলেছিল। বাধ্য হয়ে তন্ময় ছবিটি তার ঘরের টেবিল ক্লথের নিচে রেখে দিয়েছিল।
একদিন তন্ময় আর তার বাবার মধ্যে ঝগড়া এতটাই বেড়েছিল যে তার বাবা সুরেনবাবু চরম রাগে বলে উঠেছিলেন, পল্লবী ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করলে এই বাড়িতে তোর জায়গা নেই।
তন্ময় মাথা গরম করে কোলকাতায় ফিরে গিয়েছিল। সেই থেকে তার আর বাড়ির কারো সাথে কোনো যোগাযোগ হয়নি।
বিয়ের পর স্নিগ্ধা তন্ময়ের কাছে বারবার বায়না করতে থাকে তাকে তাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। প্রথমে তন্ময় রাজি না হলেও সময়ের সাথে তার মনের রাগ-অভিমান নরম হয়। সে বুঝতে পারে, বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করার এটা একটা সুযোগ হতে পারে। অফিস থেকে কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে সে স্নিগ্ধাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তারা বাড়িতে কোনো খবর না দিয়েই যাচ্ছে। স্নিগ্ধার মধ্যে উত্তেজনা আর কৌতূহল; আর তন্ময়ের মনে খানিক দ্বিধা আর উত্তেজনার মিশ্রণ।
তন্ময় আর স্নিগ্ধা দুপুর সোয়া একটার দিকে বর্ধমান স্টেশনে নামল। ষ্টেশনের বাইরে গিয়ে তারা একটা রেষ্টুরেন্ট থেকে হালকা কিছু খেল। তারপর একটা গাড়ি ভাড়া করে রওনা দিল কুসুমপুরের দিকে।
গাড়ি শহর পেরিয়ে গ্রামের পথে ঢুকে পড়ল। রাস্তার দুপাশে বিস্তৃত মাঠ, গাছপালা, আর দূরে দেখা যাচ্ছে ছিমছাম ঘরবাড়ি। স্নিগ্ধা জানালা দিয়ে মুগ্ধ চোখে গ্রামীণ প্রকৃতির রূপ উপভোগ করছে। হালকা শীত পড়তে শুরু করায় সে কাঁধের ওপর থাকা শালটা গায়ে ভাল করে জড়িয়ে নিল।
তন্ময় স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে বলল, কেমন লাগছে?
-অপূর্ব! স্নিগ্ধা মুগ্ধতার স্বরে বলল।
কিছুক্ষণ পর বাস্তার দুপাশে জঙ্গল শুরু হলো। গাছের ফাঁক দিয়ে রোদ পড়ে এক অদ্ভুত মায়াবি পরিবেশ তৈরি করেছে। দূর থেকে পাখির মিষ্টি ডাক ভেসে আসছে। স্নিগ্ধা আরও মুগ্ধ হয়ে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে লাগল।
হঠাৎ গাড়ি বিকট শব্দ করে ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে গেল। ড্রাইভার স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করেও গাড়ি চালু করতে পারল না। তন্ময় আর স্নিগ্ধা দুজনেই অস্বস্তিতে পড়ল।
তন্ময় উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, কী হল?
ড্রাইভার বলল, গাড়িটা হঠাৎ বিগড়ে গেল স্যার। দেখি, ঠিক করার চেষ্টা করি।
ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে ইঞ্জিন চেক করতে লাগল। তন্ময় আর স্নিগ্ধাও গাড়ি থেকে নেমে পড়ল।
জঙ্গলের পরিবেশ স্নিগ্ধার মন ছুঁয়ে গেল। দূবে একটা পাখি মিষ্টি সুরে ডেকে উঠল। পাখিটিকে ভালো করে দেখার জন্য সে জঙ্গলের দিকে কয়েক পা এগোল।
তন্ময় পেছন থেকে মজা করে বলল, ওই দেখো, বাঘ!
স্নিগ্ধা চমকে গিয়ে তড়িঘড়ি দৌড়ে ফিরে এসে বলল, কই? কোথায়?
তন্ময় দাঁত বের করে হাসল। ড্রাইভারও হাসতে হাসতে বলল, স্যার আপনাকে ভয় দেখাচ্ছেন। এখানে বাঘ নেই।
স্নিগ্ধা রেগে গিয়ে বলল, আমাকে ভয় দেখাচ্ছ? আমি কোনো কিছুকেই ভয় পাই না।
-একটু আগে বাঘের কথা শুনে যেভাবে ভয় পেলে--
--বারে! বাঘের কথা শুনে একটু ভয় পাবনা তা হয় নাকি!
বলে স্নিগ্ধা আবার জঙ্গলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ড্রাইভার জানাল, ইঞ্জিনে কোনো সমস্যা দেখতে পেলাম না। আপনারা গাড়িতে ওঠুন, দেখি এবার স্টার্ট নেয় কিনা।
তন্ময় স্নিগ্ধাকে ডাকল, আর বাহাদুরি দেখিয়ে জঙ্গলে যেতে হবে না। এস, গাড়িতে ওঠো।
স্নিগ্ধা ফিরে এল। তারা গাড়িতে উঠতে যাবার সময়, হঠাৎ একটি যুবক সেখানে এসে দাঁড়াল। তার চেহারা মলিন, পোশাক এলোমেলো, চুল উশকোখুশকো। করুণভাবে তন্ময় ও স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে সে বলল, তোমাদের মেরে ফেলবে। তোমরা ফিরে যাও।
তন্ময় অবাক হয়ে বলল, তুমি কে? আমাদের কে মারবে?
ড্রাইভার বিরক্ত হয়ে বলল, স্যাব, পাগলের কথায় কান দেবেন না। গাড়িতে উঠুন। সে যুবককে ধমকে বলল, যা, এখান থেকে!
যুবকটি কোনো কথা না বলে জঙ্গলের দিকে চলে যাচ্ছে। তার করুণ চোখ দুটো দেখে স্নিগ্ধার কষ্ট হল। সে বলল, হায় রে! ছেলেটি পাগল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
স্নিগ্ধা গাড়িতে উঠতে উঠতে যুবকটির দিকে আরেকবার তাকাল। যুবকটিও পেছন ফিরে তার দিকে তাকাল। তার করুণ চোখ দুটো দিয়ে আগুনের ফুলকি বেরোল। সেই দৃষ্টি দেখে স্নিগ্ধা কেঁপে উঠল। এরই মধ্যে যুবকটি সামনের দিকে ফিরে জঙ্গলের গভীরে মিলিয়ে গেল।
যুবকটির চোখ দিয়ে আগুনের ফুলকি বেরোনোর ঘটনাটা স্নিগ্ধা তন্ময়কে বলল না। সে জানে, তন্ময় এ কথা বিশ্বাস করবে না। বরং তাকে ভীতু বলে হাসবে। তাই কথাটা নিজের মনেই চেপে রাখল সে।
স্নিগ্ধা ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করল, আর কতদূর?
ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বলল, আর পনেরো-কুডি মিনিটের পথ।
তন্ময় স্নিগ্ধার হাত ধরে বলল, প্রায় এসে গেছি। ভয় লাগছে?
স্নিগ্ধা দৃঢ়ভাবে বলল, মোটেও না। আমি ভয় পাব কেন?
কয়েকবার চেষ্টা করার পর গাড়ি স্টার্ট নিল। গাড়ি ছুটে চলল কুসুমপুরের দিকে।
স্নিগ্ধা ছোটবেলা থেকেই শহরে বড় হয়েছে। সে হাসিখুশি, প্রচণ্ড সাহসী ও বুদ্ধিমতী। তার বাবা একজন স্কুল শিক্ষক, মা গৃহিণী। তারা মধ্যবিত্ত পরিবার। দুই বোনের মধ্যে স্নিগ্ধা ছোট। তন্ময়ের সঙ্গে তার বিয়েতে প্রথমে তার বাবা-মা আপত্তি করলেও পরে মেনে নিয়েছেন। এখন সে তার নতুন জীবনের সব চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
সন্ধ্যা নেমে এসেছে। গাড়ি এসে থামল বড় একটা লোহার গেটের সামনে। গেটের উপর ঝকঝকে নেমপ্লেটে লেখা, 'বিক্রম ভিলা'। দারোয়ান রতন
এগিয়ে এল। তন্ময় গাড়ি থেকে নামতেই রতন মাথা নিচু করে বলল, কেমন আছো, বড়দাদাবাবু?
জন্ময় হেসে বলল, ভালো আছি। বাড়ির সবাই কেমন আছে?
রতন মলিন মুখে বলল, ভালো আছে।
-- তোমার মুখটা ফ্যাকাশে লাগছে কেন? শরীর ঠিক আছে তো?
বতন তাড়াতাড়ি বলল, ঠিক আছি, বড়দাদাবাবু।
এ সময় স্নিগ্ধা গাড়ি থেকে নামল। রতন তাকে দেখে কিছুটা অবাক হয়ে বলল, এ কি বড়বৌদিমনি?
তন্ময় মাথা নেড়ে সায় দিলে রতন মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে বলল, একেবারে লক্ষ্মী প্রতিমা। কথাটা বলে সে স্নিগ্ধাকে হাতজোড় করে প্রণাম করল।
স্নিগ্ধাও মৃদু হেসে হাত জোড় করে প্রনাম করল।
রতন লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকে বলল, আমি তো দারোয়ান, বৌদিমনি।
আমায় কেন প্রণাম করছো?
-তুমি আমার চেয়ে বয়সে বড় তাই।
রতনের বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। সে হৃষ্টপুষ্ট এবং দেখতে পালোয়ানের মতো। বিশ্বস্ত লোক।
ড্রাইভার ব্যাগগুলো গাড়ি থেকে নামিয়ে দিল। তন্ময় ভাড়া মিটিয়ে দিলে গাড়িটা দ্রুত সেখান থেকে চলে গেল।
রতন গেট খুলে বলল, বড়দাদাবাবু, বড়বৌদিমনিকে নিয়ে ভেতরে যাও। আমি ব্যাগগুলো নিয়ে আসছি।
তন্ময় হালকা হেসে বলল, ঠিক আছে। কিন্তু বাড়িটা এত অন্ধকার কেন?
আলো জ্বালোনি কেন কেউ?
রতন গম্ভীর গলায় বলল, বড় গিন্নিমা আর ছোট গিন্নিমা এখন আলো পছন্দ করেন না। চোখের সমস্যা হয়েছে তাদের। খুব দরকার না হলে
আলো জ্বালানো হয় না।
-3। কী হলো কে জানে? হরিকাকা আর রকি কোথায়?
-হরিকাকা বাজারে গেছে। রকি ভেতরে আছে। ভেতবে যাও।
তন্ময় কিছু না বলে গেটের ভেতরে পা বাড়াল। মনে মনে ভাবতে লাগল, তাদের দেখে বাড়ির লোকজন কী প্রতিক্রিয়া দেবে।
স্নিগ্ধা রতনের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলল, ভেতরে যাচ্ছি, রতনদা।
রতন চম্লান মুখে বলল, যাও, ভয় পেও না।
কথাটা বলার সময় রতনের চোখ দুটো কেমন যেন জ্বলে উঠল। স্নিগ্ধা ভীষণ চমকে গেল। সন্দেহভরা দৃষ্টিতে সে আরেকবার রতনের চোখের দিকে তাকাল। না, সব ঠিকঠাকই আছে।
রতন প্রশ্ন করল, কিছু বলবে, বড়বৌদিমনি?
স্নিগ্ধা দ্রুত না সূচক মাথা নেড়ে তন্ময়ের পেছনে পেছনে গেটের ভেতরে ঢুকে গেল।
(চলবে)
0 মন্তব্যসমূহ
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্যে 🥰